গোলাম আযমকে নিয়ে আমাকে একবার, একজন, কঠিন একটা প্রশ্ন করেছিলেন: আচ্ছা, কেউ কি গোলাম আযমের বিরুদ্ধে এমন কোন প্রমাণ দিতে পারবে যে, তিনি কাউকে হত্যা করেছেন বা ধর্ষণ করেছেন?
আমি তাকে পাল্টা প্রশ্ন করেছিলাম, আচ্ছা, বুশ কি কাউকে নিজ হাতে হত্যা করেছেন? আমার তো ধারণা, কাউকে একটা চড়ও দেন নাই। তাহলে মাদার তেরেসা আর বুশের মধ্যে ফারাক কী! এ গ্রহে যতোসব অমানবিক কাজ হয়, বুশের কোন না ভাবে সম্মতি থাকে। লাখ লাখ মানুষকে হত্যার জন্য তিনি দায়ী- উদাহরণ দিয়ে শেষ করা যাবে না।
গোল্ডা মায়ারের স্পষ্ট কথা, কাউকে নিজ হাতে হত্যা করা- আর কাউকে হত্যা করার নির্দেশ দেয়ার মধ্যে কোন পার্থক্য নাই।
গোলাম আযম নিজ হাতে কাউকে হত্যা করেছেন বলে আমাদের জানা নাই কিন্তু তিনি অসংখ্য বাঙ্গালীকে নিধন করতে প্ররোচিত করেছিলেন।
*গোলাম আযম বলেছিলেন, পাকিস্তান যদি না থাকে তাহলে জামাত কর্মীদের দুনিয়ায় বেঁচে থেকে লাভ নাই।
(দৈনিক সংগ্রাম/ ২৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১)
*১৯৭১ সালে গোলাম আযম বলেছিলেন, বাংলাদেশ নামের কিছু হলে আমি আত্মহত্যা করবো।
(নাগরিকত্ব মামলার শুনানীতে এটর্নি জেনারেল/ ভোরের কাগজ, ০৯.০৫.৯৪)
*রাজাকারদের সমাবেশে গোলাম আযম বলেন, কালেমার ঝান্ডা উঁচু রাখার জন্য রাজাকারদের কাজ করে যেতে হবে।
(দৈনিক সংগ্রাম/ ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১)
*দুষ্কৃতিকারীদের ধ্বংস করার কাজে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ সশস্ত্র বাহিনীকে পূর্ণ সহযোগীতা করছে।
(দৈনিক সংগ্রাম/ ২৭ আগস্ট, ১৯৭১)
*পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিটি মুসলমান নিজ নিজ এলাকার দুষ্কৃতিকারীদের তন্ন তন্ন করে তালাশ করে নির্মূল করবে।
(দৈনিক সংগ্রাম/ ১২ আগস্ট, ১৯৭১)
*দুষ্কৃতিকারীদের মোকাবেলা করার উদ্দেশ্যে দেশের আদর্শ ও সংহতিতে বিশ্বাসী লোকদের হাতে অস্ত্র সরবরাহ করার জন্য আবেদন করছি।
(দৈনিক সংগ্রাম/ *তারিখ পাওয়া যায়নি, ১৯৭১)
*১৬ অক্টোবর ১৯৭১, বায়তুল মোকারমে তৌহিদী জনতার এক সভায় গোলাম আযম বলেন, তথাকথিত বাংলাদেশের আন্দোলনের ভূয়া শ্লোগানে কান না দিয়ে পাকিস্তানকে নতুনভাবে গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।
(দৈনিক পাকিস্তান/ ১৭ অক্টোবর, ১৯৭১)
*গোলাম আযম বলেন, কোন ভাল মুসলমানই তথাকথিত বাংলাদেশের আন্দোলনের সমর্থক হতে পারে না। রাজাকাররা খুব ভাল কাজ করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন
(দৈনিক সংগ্রাম/ ০২ অক্টোবর, ১৯৭১)
*বর্তমান মুহুর্তে আক্রমণাত্মক ভূমিকা গ্রহন করাই হবে দেশের জন্য আত্মক্ষার সর্বোত্তম ব্যবস্থা।
(দৈনিক সংগ্রাম/ ২৪ নভেম্বর, ১৯৭১)
*গোলাম আযম বলেন, পূর্ব পাকিস্তানে জামাতে ইসলামের কর্মীরা বেশীরভাগ রেজাকার, আলবদর, আল শামস বাহিনী গঠন করে মুক্তিবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করছে এবং প্রাণ দিচ্ছে। এখানে জামাতের অবদানই বেশী সুতরাং পূর্ব পাকিস্তান থেকে প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী হলে জামায়েত থেকেই হতে হবে।
( বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস, চতুর্থ খন্ড, মুক্তিযুদ্ধ পর্ব)
*১৯৭৩ সাল থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত গোলাম আযম সব মিলিয়ে ৭ বার সৌদি বাদশা ফয়সলের সঙ্গে দেখা করেন। প্রতিটি বৈঠকেই তিনি সৌদি বাদশাহকে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। একই সঙ্গে এই সময়কাল জুড়ে বাংলাদেশকে কোন প্রকার আর্থিক ও বৈষয়িক সাহায্য সহযোগীতা না করার জন্য মুসলিম দেশগুলোকে প্ররোচিত করার আপ্রাণ চেষ্টা করেন।
(ভোরের কাগজ, ১১.০৩.৯২)
*গোলাম আযম বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে বিধ্বস্ত মসজিদ পুর্নগঠনের আবেদন জানিয়ে ৪৫ লাখ রিয়েল সংগ্রহ করেন। অভিযোগ আছে, এই টাকার একটি অংশ দিয়ে তিনি যুক্তরাজ্যের ম্যানচেষ্টারে একটি বাড়ি কেনেন।
(সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিত ও গোলাম আযম)
No comments:
Post a Comment