Search This Blog

Tuesday 9 March 2010

কালের কন্ঠ: বোধোদয়


দৈনিক কালের কন্ঠে মারাত্মক একটা প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে 'আসাদ গেটে এখনো উর্দু ফলক' নিয়ে।

'মিডিয়া ওয়াচ' নামের একটি পত্রিকা এই ভুলটা তুলে ধরে। অবশ্য মিডিয়া ওয়াচ পত্রিকাটি ভুল ধরায় এতটাই ব্যস্ত ছিল আসাদ গেটে লাগানো পোস্টার এদের চোখে পড়েনি!

ফিরোজ চৌধুরী ছবিটা উঠিয়েছেন। আলোকচিত্রি, রিপোর্টার, বিভাগীয় সম্পাদক মায় এই পত্রিকার "বোধ হয়" সম্পাদক আবেদ খান, কেউ এটা লক্ষ করলেন না, আশ্চর্য!
মনে হচ্ছে উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটতে থাকা একদল কিশোরের এক বালখিল্য আচরণ!
উর্দু এবং আরবীর মূল পার্থক্য হচ্ছে, উর্দুতে জের-যবর-পেশ নাই। এটা একটা বালকেরও জানার কথা।


ভাগ্যিস, "বোধ হয়" সম্পাদক আবেদ খান আবার বলে বসেননি এটাই আমার এস্টাইল- যাহা উর্দু তাহাই আরবী। তাহলে বড়ো মুশকিল হয়ে যেত।
আমি কোথাও লিখেছিলাম, প্রিন্ট মিডিয়ার শক্তি অকল্পনীয়- আজ আমাদের দেশের কয়েকজন সম্পাদক মিলে যদি ঠিক করেন আমরা পাঠক বিশেষ মুহূর্তে অন্তরঙ্গ সময় কেমন করে কাটাব, আমরা অজান্তেই তা করব।
আপনার নিজের চোখে দেখা একটা ঘটনাই আপনি পত্রিকায় পড়ে বিশ্বাস করতে বাধ্য হবেন আপনার দেখায় ভুল ছিল! রাতকে দিন করা এদের পক্ষেই সম্ভব!

আচ্ছা, আবেদ খানের ওই ফোনালাপ (
এটাই আমার এস্টাইল) আমি যদি এখানে আপলোড করে দেই, কেমন হয়? জানি-জানি, অনেকে ভোঁতা দা নিয়ে রে রে করে তেড়ে আসবেন। অনেকে কঠিন স্বরে আমাকে এথিকস নিয়ে জ্ঞানগর্ভ বুলি কপচাবেন। আপনাদের রাগ আমার 'সার আখো পে'- মাথায় তুলে নিলাম।
ভাল, পত্রিকাওয়ালারা পারলে এই যে অন্তর্বাসের লাইনিং এর সেলাইয়ের সুতাটারও খবর ছেপে দেয়, তখন নীতিবিরুদ্ধ হয় না, তখন এথিকস কোথায় থাকে? কী ভাষা, জল্লাদ তাকে কোলে করে নিয়ে গেলেন! নাকি এরা বড়ো বড়ো মানুষ বলে এদের এথিকস পশ্চাদদেশের আড়ালে থাকে।

কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে কালের কন্ঠ সংশোধনী ছাপিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে। অবাক হয়েছি এই কারণে আমাদের দেশে ভুল করে ভুল স্বীকার করার চল নাই। বিশেষ করে পত্রিকাওয়ালারা তো আরেক কাঠি সরেস! অন্তত কালের কন্ঠের কাছ থেকে এমন দায়িত্বশীল আচরণ আশা করিনি! সত্যিই অবাক হয়েছি, পত্রিকাটির প্রতি অজান্তেই খানিকটা সমীহ চলে আসে।
কী আর করা! প্রতিযোগীতায় টেকার কথা মাথায় রেখে প্রথম আলোর মত ফাজিল হতে চাচ্ছে না সম্ভবত! প্রথম আলোর একের পর এক ভুলের মিছিল কিন্তু এদের ভুল স্বীকার করার, এ পথ মাড়াবার কোন গোপন ইচ্ছাই নাই। কারণ এরা বুঝে গেছে এদের ব্যতীত আমাদের গতি নাই।

যাগ গে, যেটা বলছিলাম, আসাদ গেটের এই ছবি নিয়ে চমৎকার
একটা প্রতিবেদন হতে পারত। এটায় অসংখ্য পোস্টার লাগিয়ে রাখা হয়েছে। যা অসভ্যতারই নামান্তর! আমাদের দেশে যত্রতত্র পোস্টার লাগিয়ে দিলে কারও কোন বিকার নাই। একজন আজ তার দেয়াল রঙ করিয়েছেন, আজই একজন এসে পোস্টার লাগিয়ে দিচ্ছে। দ-খ-ল লিখে তার দেয়ালের বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে, কিচ্ছু বলার নাই!
ভ্রাম্যমান আদালত কেবল ভেজালই ধরবে কেন, কেন ধরছে এদেরকে, যারা এই পোস্টার নামের আবর্জনাগুলো লাগাচ্ছে? কঠিন কিছু না, যার পোস্টার পাওয়া যাবে তাকেই ধরে জরিমানা।

আমরা এখান থেকেই শিখি। যখন বেশি শিখে ফেলি তখন স্বাধীনতা সৌধের গায়ে কুৎসিত কথা লিখি, ততোধিক কুৎসিত ছবি আঁকি।


*ছবি সূত্র: মিডিয়া ওয়াচ

2 comments:

মুকুল said...

"উর্দু এবং আরবীর মূল পার্থক্য হচ্ছে, উর্দুতে জের-যবর-পেশ নাই।"

- - -
শুভ ভাই, এই কথার সাথে আরেকটা কথা যোগ করতে চাই। যদ্দুর জানি, আরবীতেও জের-যবর-পেশ ব্যবহার করা হয় না। শুধু কোরআনের উচ্চারণ যাতে ভুল না হয় (অনেক সময় উচ্চারণ ভিন্ন হলে অর্থেরও পার্থক্য হয় বলে এবং অন্য ভাষাভাষীদের উচ্চারণের সুবিধার জন্য), সেকারণে কোরআনে যোগ করা হয়েছে। প্রচলিত আরবী লেখায় জের-যবর-পেশ ব্যবহার করা হয় না। আরবী বিভিন্ন সাইট ঘুরে দেখলাম। কোথাও জের-যবর-পেশ দেখলাম না।

।আলী মাহমেদ। said...

অনেক ধন্যবাদ মুকুল, আপনার তথ্যের জন্য। তথ্যটা অসম্ভব কাজের!

সম্ভব হলে দু-একটা আরবী সাইটের লিংক দিয়েন।