Search This Blog

Thursday 28 June 2007

বাং-নাৎসিদের গাড়িতে উড়ানো পতাকা

হ্যারি নাৎসিদের পোশাক পরে এক পার্টিতে গেলে ভারী গোলমাল শুরু হয়ে যায়। বিচিত্র জাতি এরা! সামান্য পোশাকে কি আসে যায়? এই নির্বোধরা আমাদের দেখে শেখে না কেন? 'বাং নাত্স-ই'র গাড়িতে পতপত করে উড়ানো পতাকায় আমরা স্যালুট করি।


তো, হ্যারীর কুকীর্তির জন্য ইহুদিরা ক্ষুদ্ধ হওয়াই স্বাভাবিক। কারণ ব্রিটিশদের কাছে হিটলারের সময়ে এই নাৎসি প্রতীক অত্যন্ত ঘৃণার ছিল। প্রিন্স হ্যারির পোশাকটি ছিল জেনারেল এরউইন রোমেলের মরুযুদ্ধের ইউনিফর্মের অনুকরণে তৈরি। নাৎসি রোমেলকে বলা হতো ‘মরুশৃগাল’। তার ‘আফ্রিকা করস’-এর হাতেও ব্রিটিশ সেনাবাহিনীসহ প্রচুর লোক মারা যায়।

সেই রোমেলের পোশাক পরে হ্যারির পার্টিতে যাওয়াটাকে নিয়ে এ বার ব্রিটেনের রাজ পরিবারও বিরক্ত। তাছাড়া এই মাসেই উদযাপন করবার কথা অসউইটজ কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প থেকে মুক্তির ষাটতম বার্ষিকী। এই কুখ্যাত ক্যাম্পটিকে রাশিয়ার রেড আর্মি এসে জার্মানদের হাত থেকে মুক্ত করে পোল্যান্ডকে। রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ২৭ জানুয়ারী সেন্ট জেমস প্যালেসে আহবান করেছেন তাঁদের, যাঁরা কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প থেকে বেঁচে ফিরেছিলেন। এ ছাড়াও আমন্ত্রিত থাকছেন সেই সময়কার ব্রিটিশ সেনারা।

১৯৩৩ সালে হিটলারের বাহিনী জার্মানিতে ক্ষমতায় আসে গণতান্ত্রিক প্রথায়। ১৯৩৯ সালে জার্মানি চেকোস্লাভাকিয়া আক্রমণ করে এবং আরম্ভ হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। সব মিলিয়ে চার কোটি লোক মারা যায়। তার মধ্যে আনুমানিক ষাট লক্ষ ইহুদি। কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের নৃশংস, ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। শুধু ইহুদি নয়, বেছে বেছে অত্যাচার করা হয়েছিল রুশ সৈনিক এবং পোলদের উপরেও।
ক্লারেন্স হাউসের প্রেস অফিস বুধবার রাতের বেলায় হ্যারির ক্ষমা চেয়ে লেখা একটি চিঠি প্রকাশ করে। তাতে হ্যারি লিখেছেন, ‘সরি, আমার পোশাকের নির্বাচন অত্যন্ত বাজে হয়েছিল। যদি এতে কারও কষ্ট হয়ে থাকে, তা হলে আমি ক্ষমা প্রার্থনা করি’।
ইংল্যান্ডের ‘সান’ ম্যাগাজিন খবরটা প্রথম ফাঁস করে। বৃহস্পতিবারের কাগজে বড় বড় করে ছবি। হ্যারির এক হাতে ধরা মদের গ্লাস আর অন্য হাতে সিগারেট। হ্যারির হাসিমুখ ছবি। হাতের বাজুতে বাঁধা ব্যান্ডে স্বস্তিকার চিহ্ন। কলারে ব্যাজও আঁটা রয়েছে জার্মান ভারমাখট অর্থাৎ নাৎসি প্রতিরক্ষা বাহিনীর। পাশে হেডলাইন ‘হ্যারি দ্য নাৎসি’। প্রথমে যে জ্যাকেট পরে গিয়েছিলেন তিনি, তাতে ছিল নাৎসিদের পতাকা। আর জ্যাকেট খুলতেই ভেতরে খাকি শার্টে নাৎসি ব্যাজ আর আর্মব্যান্ড।
‘সান’ কাগজ বৃহস্পতিবারে বের হয়, কিন্তু কাহিনীটা ভাল ভাবে করার জন্য ’সান’ তাদের প্রথম পাতার ছবি ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় আগের দিন রাতেই। টিভি, ইন্টারনেট সব জায়গাতেই হ্যারির খবর। রাজপরিবার চুপসে গেছে।

No comments: