Search This Blog

Thursday 28 June 2007

স্বাধীনতা- বাদামের খোসা (!): ১

মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ জানান, “আলবদররা যখন পালিয়ে যায় তাদের হেডকোয়ার্টার থেকে পাওয়া যায় বস্তা বোঝাই মানুষের চোখ- এই চোখগুলো যে বাঙ্গালীদের এতে কোন সন্দেহের অবকাশ নাই”।
( দৈনিক পূর্বদেশ, ১৯ জানুয়ারী, ১৯৭২)

আলবদর সম্পর্কে দৈনিক সংগ্রাম, ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ এ লিখেছিল, “আলবদর একটি নাম। একটি বিস্ময়! আলবদর একটি প্রতিজ্ঞা! যেখানে তথাকথিত মুক্তিবাহিনী আলবদর সেখানেই। যেখানেই দুস্কৃতিকারী, আলবদর সেখানেই। ভারতীয় চর কিংবা দুস্কৃতিকারীদের কাছে আলবদর সাক্ষাৎ আজরাইল!”


“৪ঠা ডিসেম্বর থেকে বুদ্ধিজীবী অপহরনের জন্য কারফিউ এবং ব্ল্যাক আউট শুরু হয়। ১০ ডিসেম্বর কাদামাটি মাখানো একটি বাসে অপহরন করা অধ্যাপক, ডাক্তার, সাংবাদিকদের তোলা হয় এবং প্রথমে সবাইকে নিয়ে যাওয়া হয় মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং কলেজে স্থাপিত আলবদরদের সদর দপ্তরে। কাউকে গভীর রাতে ঘুম থেকে তুলে, কাউকে দুপুরের খাবারের মাঝ থেকে উঠিয়ে নিয়ে। যে, যে অবস্থায় আছে সে অবস্থায়ই তুলে নিয়ে যায় আলবদররা”।
(ড. মোহাম্মদ হান্নান)

মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং কলেজে নৃশংস নির্যাতন চালানো হয় বুদ্ধিজীবীদের উপর। এরপর রায়ের বাজারের ইটখোলা, কাঁটাসুরের বধ্যভূমি, শিয়ালবাড়ী বিভিন্ন এলাকায় তাঁদের নৃশংসভাবে ঠান্ডা মাথায় কুচিকুচি করে কেটে হত্যা করা হয় যেন বুদ্ধিজীবীদের সনাক্ত না করা যায়, চেহারা চেনা না যায়। পরে তাঁদের অত্মীয়স্বজনরা পরনের লুঙ্গি, শার্ট দেখে তাঁদের স্বজনদের সনাক্ত করেন!

“আলবদর বাহিনী ছাড়াও জামাতে ইসলামী রেজাকার বাহিনী নামে আরেকটি ঘাতক বাহিনী সংগঠিত করে। আরবী শব্দ ‘রেজা’ এবং ফারসী শব্দ ‘কার’ এর সমন্বয়ে 'রেজাকার' শব্দের উৎপত্তি। রেজাকার শব্দের অর্থ যারা স্বেচ্ছায় কাজ করে অর্থাৎ সেচ্ছাসেবক।”
(দৈনিক সংগ্রাম, ৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১)

রেজাকার বা রাজাকাররা পাকিস্তানী আর্মিদেরকে অবলীলায় বাঙ্গালী মেয়েদেরকে তুলে দেয় ধর্মীয় ভুল ব্যাখ্যার মোড়কে। যুদ্ধে এরা নাকি ‘মালে গণিমত’!
“একদিন পাকিস্তানী আর্মি এক রাজাকারকে মেয়ে যোগাড় করে দিতে বলে। ওই রাজাকার অনেক খুঁজেও কোন মেয়ে যোগাড় করে দিতে ব্যর্থ হলে, পাকিস্তানী আর্মিরা রাজাকারকে বলে তার বাড়ীতে নিয়ে যেতে। রাজাকার সরল মনে পাকিস্তানী আর্মিদেরকে তার বাড়ীতে নিয়ে যায়। রাজাকারের বাড়ীতে গিয়েই আর্মিরা ভেতরে ঢুকে পড়ে- তারা দেখে রাজাকারের মা বসে আছেন। তারপরেই আর্মিরা বাইরে চলে আসে এবং রাজাকারের বুকে রাইফেল ধরে তার চোখের সামনে তার মাকে উপর্যুপরি, একে একে সবাই ধর্ষণ করে। এক সময় আর্মিরা তাদের ক্যাম্পে চলে যায়।
এ খবর ছড়িয়ে পড়ে। রাজাকারটি এরপর অজানার উদ্দেশ্যে হারিয়ে যায়- তার আর কোন খবর পাওয়া যায়নি।”
(স্বাধীনতার দলিল, অষ্টম খন্ড)।

No comments: